পশ্চিমবঙ্গের ১০ জেলায় বন্যা, আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষ
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : দামোদর নদী এবং এর সঙ্গে সংযুক্ত নদীগুলোর পানি ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ১০টি জেলার বিস্তির্ণ এলাকা বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। এতে আক্রান্ত হয়েছেন এসব জেলার বিভিন্ন অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষ।
বন্যা উপদ্রুত জেলাগুলো হলো হাওড়া, হুগলি, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান এবং পূর্ব বর্ধমান।
বঙ্গপোসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে গত কয়েক দিনে এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে বৃষ্টিপাত হয়েছে বেশি। ফলে নদ-নদী ও অন্যান্য জলাশয়ের পানি বেড়ে নিচু এলাকাগুলো বন্যার ঝুঁকিতে ছিল। এ সময় প্রতিবেশী ঝাড়খণ্ডে রাজ্যেও ব্যাপক বর্ষণ হয়। এতে দুই রাজ্যের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত দামোদর নদীর পানি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পায়।
সোমবার রাতে প্রতিবেশী রাজ্য ঝাড়খণ্ডে দামোদর নদী প্রকল্প দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) বাঁধ খুলে দেওয়া হয়। এতে নদীর উজানে থাকা ঝাড়খণ্ড থেকে ভাটির পশ্চিমবঙ্গ অংশে সোমবার ৯০ হাজার কিউসেক এবং মঙ্গলবার ২ লাখ ১০ হাজার কিউসেক পানি প্রবেশ করে। ফলে প্লাবিত হয় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের এই দশ জেলা।
দামোদর প্রকল্প পরিচালনা ও তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ঝাড়খণ্ডের রাজ্য সরকার। বুধবার ভারতের বৃহত্তম বার্তাসংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের বন্যার জন্য দায়ী কেন্দ্রীয় সরকার এবং ঝাড়খণ্ডের রাজ্য সরকার। দামোদর প্রকল্প এবং ঝাড়খণ্ডকে বাঁচাতে তারা বাংলার (পশ্চিম বঙ্গ) দশ জেলাকে ডুবিয়ে দিয়েছে।”
“এর আগে এ ধরনের ঘটনা কখনও ঘটেনি। প্রায় সাড়ে তিন লাখ কিউসেক পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী এবং ডিভিসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি, কিন্তু তারা দায় এড়িয়ে গেছেন।”
“লাখ লাখ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। উপদ্রুত বিভিন্ন এলাকায় যে গতিতে পানি বাড়ছে, তাতে যে কোনো সময় সবকিছু তলিয়ে যেতে পারে।”
বৃহস্পতিবার রাজ্যের কয়েকটি বন্যা কবলিত অঞ্চল তিনি সফর করবেন বলে জানা গেছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে।
এদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগের জবাব কেন্দ্রীয় সরকার কিংবা ঝাড়খণ্ড রাজ্য সরকার না দিলেও এ ইস্যুতে তার সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজেপির নেতা এবং বিধানসভার বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি বলেন, “বন্যা মোকাবিলায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কোনো আগাম প্রস্তুতি ছিল না। মুখ্যমন্ত্রী, আপনি বরাবরই নিজের দায় অন্যের ওপর চাপানোর চেষ্টা করেন। এই অভ্যাস থেকে সরে আসুন।”