ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন সুজানগর পৌরসভার নবনির্বাচিত মেয়র
এম এ আলিম রিপন, সুজানগর : ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন সুজানগর পৌরসভার নব-নির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম রেজা। সোমবার দুপুরে সুজানগর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দের পক্ষ থেকে পৌর সচিব গোলাম নবী নব-নির্বাচিত মেয়র রেজাউল করিম রেজার হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীনুজ্জামান শাহীন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আব্দুল জলিল বিশ্বাস,উপ-দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম (রেজা মন্ডল), এন এ কলেজের সহকারি অধ্যাপক আবুল হাশেম, পৌরসভার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান, পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারী ইউনিটের সভাপতি মোঃ বাবুল হোসেন,সাদারণ সম্পাদক মাসুদ রানা,কর নির্ধারক সাজেদুল হক, লাইসেন্স পরিদর্শক সুব্রত কুমার কুন্ডু,স্যানিটারী ইন্সপেক্টর আমিরুল ইসলাম, কঞ্জারভেন্সী ইন্সপেক্টর হাসান উদ্দিন ও টিকাদানকারী সুপারভাইজার দেলোয়ার হোসেন সহ পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রবিবার (৪ এপ্রিল) দু-একটি বিছিন্ন ঘটনা ছাড়া করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবাধ, সুষ্ঠ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুজানগর পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এদিন সকাল ৮ থেকে শুরু হয়ে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারেরা স্বঃস্ফূর্তভাবে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ব্যালট পেপারে গোপনে সিল মেরে তারা তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। সুজানগর পৌরসভার এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রেজা নৌকা প্রতিক নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় এদিন শুধু কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সুত্রে জানা যায়, পৌরসভার এ নির্বাচনে ১নং সংরক্ষিত আসনে মহিলা কাউন্সিলর পদে মোছাঃ জাহানারা (জবাফুল) মার্কা প্রতীকে ১,৪৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা.জহুরা খাতুন (আনারস মার্কা) প্রতিক নিয়ে পান ৮৭৯ ভোট। ২ নং আসনে মোছাঃ চাম্পা খাতুন (আনারস) মার্কা প্রতীক নিয়ে ২৫৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা.রুশি খাতুন (জবা ফুল) প্রতিক নিয়ে পান ১০২৮ ভোট এবং ৩ নং আসনে মোছাঃ লিপি খাতুন (আনারস) মার্কা প্রতীক নিয়ে ১২০৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোছা.মিনারা খাতুন (জবা ফুল) প্রতিক নিয়ে পান ৮৭৪ ভোট।
এছাড়া সাধারণ কাউন্সির পদে ১ নং ওয়ার্ডে মো.আব্দুল হাই (পানির বোতল) মার্কা প্রতীক নিয়ে ৫৫৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজুর রহমান (উটপাখি) প্রতিক নিয়ে পান ১৮ ভোট। ২নং ওয়ার্ডে মো.আব্দুর রহিম (পাঞ্জাবি) মার্কা প্রতিক নিয়ে ৮২০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজিজুল হক (উটপাখি) প্রতিক নিয়ে পান ৩০৪ ভোট। ৩ নং ওয়ার্ডে মো.জায়দুল হক জনি (উটপাখি)মার্কা প্রতিক নিয়ে ৩০২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আনিছুর রহমান খোকন (পাঞ্জাবি) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ২২৫ ভোট। ৪নং ওয়ার্ডে মো.আব্দুল্লাহ আল মামুন (উটপাখি) মার্কা প্রতীক নিয়ে ৮৯২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুন্নাফ শেখ (পাঞ্জাবি) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ২৯৯ ভোট। ৫নং ওয়ার্ডে মো.রেজাউল মোল্লা (ডালিম) মার্কা প্রতীক নিয়ে ৫৫২ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামাল উদ্দিন (পানির বোতল) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ৪৭০ ভোট।
৬নং ওয়ার্ডে মো.জাকির হোসেন (উটপাখি) মার্কা প্রতিক নিয়ে ৪৮১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মতিন শেখ (ডালিম) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ৩৩৫ ভোট। ৭নং ওয়ার্ডে মো.মোশফিকুর রহমান (টেবিল ল্যাম্প) মার্কা প্রতিক নিয়ে ৮৩৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল কালাম আজাদ (ডালিম) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ২৩৩ ভোট। ৮নং ওয়ার্ডে মো.পাশু সরদার (পানির বোতল) মার্কা প্রতিক নিয়ে ৭৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মুক্তার হোসেন (ডালিম) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ৪২০ ভোট এবং ৯নং ওয়ার্ডে মো.হেলাল উদ্দিন খান (পানির বোতল) মার্কা প্রতীক নিয়ে ৭৭১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী রাকিব হাসান (উটপাখি) মার্কা প্রতীক নিয়ে পান ৪৯১ভোট।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. রওশন আলী জানান, সুজানগর পৌরসভার এ নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রেজাউল করিম রেজা নৌকা প্রতিক নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ায় শুধু কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ, র্যাবের টিম, কয়েক প্লাটুন বিজিবি, একাধিক পুলিশের মোবাইল টিম, স্ট্রাইকিং টিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন জানান, পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩২ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১০টি ভোটকেন্দ্রের ৫৮টি কক্ষের মাধ্যমে এ ভোটগ্রহন অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য এর আগে প্রথম দফায় গত ১৬ জানুয়ারী সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ধার্য ছিল। কিন্তুু উচ্চ আদালতে রিটপিটিশনের প্রেক্ষিতে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
এরপর দ্বিতীয় দফায় গত ৩০ জানুয়ারী নির্বাচনের দিন ধার্য করা হলেও নির্বাচনের মাত্র একদিন আগে ওই নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ গত বুধবার ( ৩১ মার্চ ) তৃতীয় দফায় এ পৌরসভার নির্বাচনের ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়। কিন্তুু ভোটগ্রহণের মাত্র দুইদিন আগে সোমবার (২৯ মার্চ) আবার নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরে গত বুধবার উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে মামলাটি খারিজ হওয়ায় গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন স্থগিতকৃত সুজানগর পৌরসভা নির্বাচনের নতুন নির্ধারিত রবিবার (৪ এপ্রিল) তারিখে সুজানগর পৌরসভার এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো ।
38