পর্যটকের ‘লুঙ্গি পরা’ নিয়ে যত কাণ্ড
পদ্মাটাইমস ডেস্ক : পরিবার নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যান জাহিদ হাসান। উঠেন এক হোটেলে। তিনি লুঙ্গি পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তাই লুঙ্গি পরেছিলেন। কিন্তু লুঙ্গি পরে হোটেল থেকে বের হতে গেলে বাধে বিপত্তি। এ নিয়ে ওই হোটেলে গার্ডের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার ঘটনা ঘটেছে।
এমনকি লাঞ্ছনারও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তবে একে দু’পক্ষের ভুল বোঝাবুঝি বলে অবহিত করেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। ঊর্ধ্বতনদের হস্তক্ষেপে এ ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সন্ধ্যার পর কলাতলীর তারকা হোটেলে ওশান প্যারাডাইসে।
জাহিদ হাসান নামে ওই পর্যটক বলেন, আমি বাঙালি হিসেবে লুঙ্গি পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। কিন্তু লুঙ্গি পরে হোটেল থেকে বের হতে গেলে নিরাপত্তাকর্মী কাউসার আহমেদ আবছার আমাকে লুঙ্গি পাল্টে আসতে বলেন।
কেনো আমার স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলা হলো, এ নিয়ে বাগবিতণ্ডা হয়। পরিবারের সদস্যদের সামনে এ আচরণ লাঞ্ছনার সামিল। তাই আমি ট্যুরিস্ট পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করে সহযোগিতা চেয়েছি।
‘অবশ্য তারা আসার আগেই হোটেলের ফ্রন্ট অফিসের ঊর্ধ্বতনরা বিষয়টি ‘ভুল বোঝাবুঝি’ হিসেবে দেখতে অনুরোধ করে ক্ষমা চেয়েছেন। পরে আমরা বাইরে থেকে ঘুরে আসি।’
ওশান প্যারাডাইসের পরিচালক আবদুল কাদের মিশু বলেন, হোটেলে লুঙ্গি পরিহিত পর্যটক লাঞ্ছনার ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি ছাড়া কিছুই নয়। কারণ লুঙ্গি পরা পর্যটক হোটেলে ঢুকতে বা বের হতে কোনো নিষেধের কথা গার্ড কিংবা অন্য স্টাফদের বলা নেই। এটা পর্যটন এলাকা। এখানে দৃষ্টিকুটু না হলে যে যার মতো অবয়ব নিয়ে চলাফেরা করতে পারেন, এটা পর্যটন স্বাধীনতা।
তিনি আরো বলেন, সন্ধ্যার পর আমাদের অতিথি জাহিদ সাহেব লুঙ্গি পরে হোটেল হতে বের হতে গিয়ে হোটেলের নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়। পরে ফ্রন্ট অফিস স্টাফদের হস্তক্ষেপে তা নিরসন হয় এবং পরিবার নিয়ে আনন্দ চিত্তে হোটেলে অবস্থান করছেন জাহিদ সাহেব।
তিনি বলেন, এটা সঠিক, হোটেলের সুইমিং পুলে গোসলকালীন লুঙ্গি, শাড়ি, বোরকা বা আলখেল্লা জাতীয় পোষাক পরে নামতে অনুৎসাহিত করি। কারণ এসব আলখেল্লা পড়ে সাতার কাঁটতে গিয়ে বিপদের সম্ভাবনা থাকে।
তবে সংবাদকর্মীরা হোটেলে চেকইন করার সময় জাহিদ সাহেবকে লুঙ্গি পরা দেখে ‘লাঞ্ছনা’ করা হয়েছে বলে ভুল ম্যাসেজ প্রচার করছেন। যা খুবই দুঃখজনক। তাই পর্যটক লাঞ্ছনার বিষয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, একজন পর্যটকের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে দেখা গেছে পর্যটকের সঙ্গে হোটেল কর্তৃপক্ষের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। স্টাফদের আরো পর্যটন বান্ধব হতে হোটেল কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সব সময় কাজ করছি।