শিশু নূরীর কান্না : মা হাফসাকে জামিন দিলেন হাইকোর্ট

প্রকাশিত: মার্চ ৬, ২০২৪; সময়: ১২:১১ অপরাহ্ণ |
শিশু নূরীর কান্না : মা হাফসাকে জামিন দিলেন হাইকোর্ট

পদ্মাটাইমস ডেস্ক : গত বছর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া নাশকতার মামলায় কারাগারে থাকা হাফসা আক্তারকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (৬ মার্চ) বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এই আদেশের ফলে শিশু নূরীর মায়ের মুক্তিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল ও অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শাহিন আহমেদ খান।

এর আগে, নাশকতার মামলায় কারাগারে থাকা মা হাফসা আক্তারের জামিন চাইতে হাইকোর্টে আসে চার বছরের শিশু নুরজাহান নূরী। সম্প্রতি মায়ের মুক্তির জন্য মানবন্ধন করে বেশ আলোচনায় সে।

সোমবার (৪ মার্চ) বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চে তার জামিন আবেদনের ওপর শুনানি হয়।

গত বছরের ২৩ নভেম্বর পত্রিকায় ‘নূরীর কান্নার জবাব নাই’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ এসেছেন কোলের শিশু নিয়ে, কেউ এসেছেন অবুঝ সন্তান নিয়ে, আবার কেউ নাতি-নাতনি নিয়ে। বৃদ্ধ বাবা, মা, স্ত্রী, ভাই-বোনরাও এসেছেন। তাদের কারও চোখে পানি, কারও হাতে প্ল্যাকার্ড, কারও হাতে ব্যানার।

তারা সবাই বিরোধী রাজনৈতিক দলের ‘নির্যাতিত’ নেতাকর্মীদের স্বজন। বিএনপির এসব নেতাদের মধ্যে কেউ শিকার হয়েছেন গুম-খুনের, কেউ বা আছেন কারাগারে। প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে স্বজনদের মুক্তি দাবি করেছেন তারা।

রাজধানীর পুরান ঢাকা থেকে দাদা-দাদির হাত ধরে আসে দুই অবুঝ শিশু বর্ষা ও নূরী। এ মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে কারাবন্দি মায়ের জন্য মুক্তি দাবি করে এই দুই শিশুকন্যা।

শিশু বর্ষা মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলে, আমার মাকে ছেড়ে দেন। আমার পরীক্ষা। আমি মাকে ছাড়া স্কুলে যেতে পারি না।

এ সময় পাশে থাকা বৃদ্ধ দাদি বলেন, আমার ছেলে আবদুল হামিদকে না পেয়ে পুত্রবধূ পুতুলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। তার নামে তো কোনো মামলা নেই।

আমার পুরো পরিবার বিএনপি করে- এটাই অপরাধ। চারদিন ধরে আমার বউমার সঙ্গে দেখাও করতে পারছি না। দুটি দুধের শিশুকে আমি সামলাতে পারি না।

সারারাত ঘুমাতে পারি না। বোন ও দাদি যখন কথা বলছিলেন তখন অঝোর ধারায় কাঁদছিল ছোট্ট শিশু নূরী। তার কান্নার জবাব দেওয়ার ভাষা ছিল না কারও।

তিন ছেলের গ্রেপ্তারের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে পিতা আব্দুল হাই বলেন, আমার তিন সন্তানকে কারান্তরীণ করা হয়েছে। এক ছেলেকে ১০ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। বড় ছেলেকে না পেয়ে তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পরে পুত্রবধূকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে পুলিশ। অথচ, আমার ছেলের বউ রাজনীতিতে জড়িত নন। তিনি বলেন, বিএনপি করা কি আমাদের অপরাধ? আমরা শুধু সুষ্ঠু ভোটের অধিকার চেয়েছি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাবা বিএনপির কর্মী আবদুল হামিদ ভূঁইয়া পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মা হাফসা আক্তার নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন। মা-বাবার জন্য কাঁদছে শিশু নূরজাহান আক্তার নূরী।

  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
পদ্মাটাইমস ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
topউপরে