সম্পত্তির লোভে বিধবা নারীকে হত্যা, কুষ্টিয়ায় একমাত্র পুত্রসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড
নিজস্ব প্রতিবেদক, কুষ্টিয়া : কুষ্টিয়ায় সম্পত্তির লোভে মমতাজ বেগম ওরফে জাগা খাতুন নামে এক বিধবা নারী কে হত্যার দায়ে একমাত্র সন্তানসহ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। বুধবার বিকেলে কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ রুহুল আমীন আসামীদের উপস্থিতি এ রায় ঘোষনা করেন। পরে আসামীদেরকে কঠোর পাহারায় জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন পুলিশ।
সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, মিরপুর উপজেলার কাটদহ এলাকার মৃত ফজল বিশ্বাসের ছেলে মুন্না বাবু, ইয়াছিন আলীর ছেলে রাব্বি আলামিন, মৃত ইনছার বিশ্বাসের ছেলে আব্দুল কাদের। এদের মধ্যে মুন্না বাবু ওই নারীর একমাত্র সন্তান।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২১ জানুয়ারী, বিকেল ৪টায় মমতাজ বেগম ওরফে জাগা খাতুন তার নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। এ ঘটনায় নিহতের একমাত্র ছেলে মুন্না বাবু নিজের মা নিখোঁজের ৪দিন পর ২৫ জানুয়ারীতে মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন। প্রায় একমাস পর ২৩ ফেব্রুয়ারী কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশে সন্দেহ হলে নিহতের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে নিহতের ছেলে ঘটনার সাথে নিজের সম্পৃক্ততাসহ তার চাচা আব্দুল কাদের ও বন্ধু রাব্বি আলামিনকে এ ঘটনায় জড়িত বলে উল্লেখ করেন।
গোয়েন্দা পুুলিশ বাকী দুইজনকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকান্ডের মোটিভ উদ্ঘাটিত হয় এবং আটক আসামীরা স্বীকারোক্তি দেন যে, বিধবা মমতাজ বেগমমের স্বামীর অবর্তমানে তাহার কয়েক কোটি টাকার জমি জায়গা ও পোড়াদহের কাপড় হাটে ৭/৮টি দোকান হাতিয়ে নিতে তার গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করে তারা। পরে মৃতদেহটি গুমের উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী একটি পুকুর পাড়ে পুঁতে রাখে। সে অনুযায়ী ঐদিন বিকেলে মিরপুর থানা পুলিশ মমতাজ বেগমের বস্তাবান্দি গলিত লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপতাল মর্গে প্রেরন করেন।
এ ঘটনায় নিহতের ভাই তোরাব আলী বাদি হয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারী রাতে মিরপুর থানায় তিনজনের নামোল্লেখসহ একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১৭ এপ্রিল মিরপুর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক মো: কায়েশ মিয়া ৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডে জড়িত অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।