সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় হামলা ও ১৩ পুলিশকে হত্যা মামলায় ৬ হাজার আসামী
নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে এনায়েতপুর থানা হামলা ভাঙচুর, লুটপাট ওসি সহ ১৩ পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছে। এতে থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহম্মদ মোস্তফা খান বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী,খোকশাবাড়ি গ্রামের মুল্লুক চাঁন, বেলকুচি উপজেলার ভাঙ্গবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহুরুল ইসলাম ভূইয়ার নাম উল্লেখ এবং ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার জনকে অজ্ঞাত আসামী করা হয়েছে।
এনায়েতপুর থানার এসআই আব্দুল মালেক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা বিষয়টি নিশ্চিত করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চু ও তাদের অন্যান্য নেতারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধ দাবি নিয়ে থানায় আসতেন। তা না মানায় থানার পুলিশের ওপর তাদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারকৃত এক আসামীকে তাদের দাবি অনুযায়ী ছেড়ে না দেয় ও মামলা নেয়ায় তাদের নেতৃত্বে ৪৫০-৫০০ জন অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারী থানা ঘেরাও করে এবং ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাকের অপসারণের দাবি করে।
তা মেনে না নেয়ায় আমিরিন নেতাদের ক্ষবের সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় গত ৪ আগস্ট দুপুর দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা এনায়েতপুর থানার সামনে সমবেত তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেন। পরে এনায়েতপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মোস্তফা খান বাচ্চুর নেতৃত্বে এজাহারনামীয় আসামীসহ ৫ হাজার থেকে ৬ হাজার জন দুষ্কৃতকারী দলবদ্ধ হয়ে লাঠি-সোটা, পেট্রলবোমা ও অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে থানায় হামলা চালায়।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, এ সময় পুলিশ আত্মরক্ষায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে তারা পুলিশের কোয়ার্টার ও ওসির বাসভবনে আগুন লাগিয়ে দেয়। তখন আসামীরা থানার ভিতরে এসআই তহছেনুজ্জামান, এএসআই ওবায়দুর রহমান, কনস্টেবল আরিফুল আজম, রবিউল আলম শাহ, হাফিজুল ইসলাম, শাহিন, রিয়াজুল ইসলাম, ওসি আব্দুর রাজ্জাক, এসআই আনিছুর রহমান, রহিজ উদ্দিন খান, প্রণবেশ কুমার বিশ্বাস, কনস্টেবল আব্দুল সালেক, হানিফ আলী কে পিটিয়ে, কুপিয়ে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। একপর্যায়ে আসামিরা থানা ভবন ধ্বংস ও জীবিত পুলিশ সদস্যদের হত্যার উদ্দশ্যে থানা ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে ইস্যুকৃত অস্ত্র, গুলি এবং জনসাধারণের জমাকৃত বেসরকারি অস্ত্র-গুলি লুট করে। এতে থানার ক্ষতি হয় ৪ কোটি টাকার সম্পদ।
মামলার বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি হাসিবুল্লাহ হাসিব জানান, মামলাটির পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।