৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ, সাঁথিয়ার সাবেক দুই মেয়রসহ ১৯ জনের নামে দুদকের মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, পাবনা : পাবনার সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক দুই মেয়রসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে টাকা আত্মসাতের মামলা করেছে দুদক। সাবেক দুই মেয়র মিরাজুল ইসলাম পরামানিক এবং মাহবুবুল আলম বাচ্চু।
তারা মেয়র থাকা অবস্থায় ডেঙ্গু মশা নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, প্রচার, কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস মোকাবেলার সরকারি বরাদ্ধের ৪৩ লক্ষাধিক টাকা নিয়মবহির্ভূতভাবে আত্মসাৎ করে। দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক, মনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার প্রধান আসামী মিরাজুল ইসলাম প্রামানিক (৫৮) সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক মেয়র। তিনি বোয়াইলমারী গ্রামের মজিবর রহমান প্রামানিক ছেলে। অপরজন মাহবুবুল আলম বাচ্চু(৪৮), তিনি কোনা বাড়িয়ার রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি সদ্য বাতিল করা সাঁথিয়া পৌরসভার মেয়র।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন- সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী, রাজবাড়ীর বার্থা খানপাড়ার লোকমান হোসেনের ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন খান (৫৪), সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী, দোগাছির খয়েসূতি গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে শাহীনুজ্জামান (৫৩), সাঁথিয়া পৌরসভার সাবেক হিসাবরক্ষক আব্দুল বারিক (৪৯), সাঁথিয়া পৌরসভার কার্য-সহকারী, আবু ইছা শফিউল আলম (৪৭), সাঁথিয়া পৌরসভার প্রধান সহকারী নুরুজ্জামান (৪৩), পৌরসভার এম.এল.এস.এস নুরুল ইসলাম (৪৬), ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হামিদ ব্যাপারী (৬৬), ১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চাঁদ আলী (৫২), ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর
আঃ লতিফ (৬২), ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার আঃ হাই (৬৫), ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তোছাদ্দেক হোসেন নাসিম (৪৩), ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফছার আলী (৬৮), ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলাউদ্দীন (৩৩), ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার শরিফুল ইসলাম (৪৪), ৭,৮,৯ মহিলা কাউন্সিলর জীবন নাহার (৬০), ১,২ ৩ এর সাবেক কমিশনার (১৮) বুলবুলি খাতুন (৫৫), ৪,৫,৬ এর হাসিনা খাতুন (৪৭।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, পাবনা জেলার সাঁথিয়া পৌরসভায় স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে ডেঙ্গু মশক নিধন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও প্রচার, কোভিড-১৯ করোনা মহামারি মোকাবেলার জন্য ১৯-২০ অর্থ বছরে পনেরো লক্ষ নব্বই হাজার চারশত, ২০-২০২১ অর্থ বছরে এগারো লক্ষ তিন হাজার আটশত সাতষট্টি, ২১-২২ অর্থ বছরে এগারো লক্ষ পচিশ হাজার একশত পঞ্চাশ হাজার টাকা সবার যোগসাজশে ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোটেশন তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন।
এছাড়াও তারা সাঁথিয়া পৌরসভার কোন জীপ গাড়ী না থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত গাড়ীতে জ্বালানি ব্যয়ের জন্য বিল উত্তোলন করে দুই লক্ষ পনেরো হাজার নয়শত ছিয়ানব্বই টাকা ও সাঁথিয়া পৌরসভার ড্রেন পরিষ্কারের নামে ভুয়া বিল ভাউচার প্রস্তুত করে দুই লক্ষ বাহাত্তর হাজার একশত পঞ্চাশ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
সর্বমোট ৪৩ লাখ ৭ হাজার ৫৩৩ টাকা পরস্পর যোগসাজশে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে ভুয়া বিল-ভাউচার ও কোটেশন তৈরি করে বিল উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে।
দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক, মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করা হয়। করোনা ভাইরাস মোকাবেলার টাকা মানুষের জন্য খরচ না করে নিজেরা ভূয়া ভাউচার করে আত্মসাৎ করে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর মামলা করা হয়েছে। তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।