নাটোরে স্বামী-স্ত্রীর যাবজ্জীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক, নাটোর : নাটোরে এক অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে স্বামী-স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডসহ ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।
সোমবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ( জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সদর উপজেলার উলুপুর গ্রামের জব্বার হোসেনের ছেলে বেলাল হোসেন (৩৭) ও তার স্ত্রী বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আলাউদ্দিন প্রামানিকের মেয়ে জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিন (২৭)। দন্ডপ্রাপ্ত বেলাল হোসেন পলাতক রয়েছেন।
মামলার বাদি নাটোর সদর থানার এসআই নুরুজ্জামানের দায়েরকৃত এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালের ১১ জানুয়ারি সকালে নাটোর সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের জনৈজ নুর মোহম্মদ মুন্সির আম ও কলাবাগানের মধ্যে ৩৫ বছর বয়সী অজ্ঞাত এক নারীর গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ মহিলাদের ব্যবহৃত একটি পাম ব্যাগ উদ্ধার করে। পরে ওই ব্যাগের মধ্যে থেকে দন্ডপ্রাপ্ত জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনের পাসপোর্ট সাইজের সাদাকালো একটি ফটো ও টেলিফোন গাইড বই পাওয়া যায়।
ওই বইয়ে জোসনা খাতুনের নাম,বাবার নাম ও ঠিকানাসহ তার ভাই খোরশেদ আলমের নাম ও তেবাড়িয়া দাদাপুর রাস্তা লেখা ছিল। এছাড়া বেশ কয়েকজনের ফোন নম্বর লেখা ছিল।
পুলিশ সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ মর্গে প্রেরন করে। এ ব্যাপারে নাটোর সদর থানার তৎকালীন এসআই নুরুজ্জামান বাদি হয়ে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। সুরতহাল ও ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে ধর্ষনের পর হত্যা করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই মামলা দায়ের পর ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া পাসপোর্ট সাইজের সাদাকালে ফটো ও নাম ঠিকানার সূত্র ধরে পুলিশ জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনকে আটক করে।
পরে জোসনা খাতুন ওরফে জেসমিনের স্বীকারোক্তিতে তার স্বামী বেলাল হোসেন জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে।
ইত্যবসরে মামলার আসামী জেসমিনের স্বামী জামিন নিয়ে গা ঢাকা দেয়। দীর্ঘ এক যুগ পর সোমবার দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ( জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এই রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার সময় জেসমিনের স্বামী জামিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামী বেলাল হোসেন হাজির ছিলেননা।
আদালতের স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান জানান, অজ্ঞাত নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে বিজ্ঞ বিচারক মামলার দুই আসামী স্বামী-স্ত্রীকে কারাদন্ডের আদেশ দেন।
এছাড়া উভয়কেই ১ লাখা টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন। জরিমানার টাকা রাষ্টিয় কোষাগারে জমা করার আদেশ দেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী বেলাল হোসেন দীর্ঘদিন ধরে পলাতক রয়েছেন।